জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, অনলাইনে বা ই-রিটার্ন দিতে করদাতাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড বা জমা দিতে হবে না। শুধু ওই সব দলিলের তথ্য দিলেই হবে। তিনি বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, সনাতনী পদ্ধতিতে চাকরিজীবীদের আয়, তথা বেতন–ভাতার প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যাংক হিসাবের এক বছরের লেনদেন বিবরণী (স্টেটমেন্ট) জমা দিতে হয়। অনলাইনে রিটার্ন জমার সময় শুধু ওই ব্যাংক বিবরণীর তথ্য দিলেই হবে। কাগুজে বিবরণী আপলোড করার দরকার হবে না।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, ব্যাংক হিসাবের বিবরণী অনুসারে, ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, সুদের তথ্য ও ব্যাংক হিসাবের নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য দিলে হবে।
আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির শুল্ক, কর ও ভ্যাট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চার সিটি করপোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলগুলোর অধিভুক্ত সরকারি কর্মচারী, সারা দেশের তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল প্রতিষ্ঠানসহ কিছু কোম্পানির কর্মকর্তাদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, ম্যারিকো বাংলাদেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ, বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) ও নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি।
চলতি ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজীকরণের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম গত ৯ সেপ্টেম্বর করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ইতিমধ্যে অনলাইনে আয়করের ই-রিটার্ন জমার সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সরকার আশা করছে, চলতি অর্থবছরে মোট ১৫ লাখ করদাতা অনলাইনে আয়কর নথি বা রিটার্ন জমা দেবেন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
অনলাইনে রিটার্ন তৈরি ও জমা দেওয়া যাচ্ছে। আবার এই সিস্টেম থেকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করদাতারা কর পরিশোধ করতে পারছেন। এ ছাড়া দাখিল করা রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ডাউনলোড ও প্রিন্ট করা যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘কর ফাঁকি বা হারানো রাজস্ব আদায় করা এনবিআরের অন্যতম প্রধান কাজ। এটি আমরা করছি। আন্দোলনের কারণে জুলাই-আগস্ট মাসে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এর প্রভাবে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা হলেও সমস্যা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন