ইএসবি নিউজ ডেস্ক
১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১:৪৪ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

আয়নাঘর সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আয়নাঘর সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে। যার সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র‌্যাব-২ এর সিপিসি-৩ এর ভেতরের সেলগুলো পরিদর্শন করেছেন। এখন তারা র‌্যাব সদর দপ্তরের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স সেন্টারে যাচ্ছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এ রকম ইন্টারোগেশন সেল, টর্চার সেল সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে; সেগুলো শুনলাম আজকে। আমার ধারণা ছিল যে, এখানে আয়নাঘর বলতে যে কয়েকটা আছে তাই। কিন্তু এখন শুনলাম, আয়নাঘরের ভার্সন সারা দেশজুড়ে আছে। কেউ বলছে ৭০০, কেউ বলছে ৮০০। সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি। কতটা জানা আছে, কতটা অজানা রয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নৃশংস অবস্থা। প্রতিটি জিনিস যে হয়েছে এখানে, যতটাই শুনি অবিশ্বাস্য মনে হয়। এটা কি আমাদেরই জগত, আমাদেরই সমাজ। আমরা কি এটা করলাম। যারা নিগৃহীত হয়েছে, যারা এটার শিকার হয়েছে তারাও আমাদের সঙ্গে আছে। তাদের মুখ থেকে শুনলাম- এটা কীভাবে হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে। গত সরকার সর্বক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে। এটা (আয়নাঘর) এর একটি নমুনা।’

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আয়নাঘর পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ‘বিশেষ’ স্থানে রাখা হতো। এ নিয়ে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এসব স্থান ‘আয়নাঘর’ নামে প্রকাশ্যে আসে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আয়নাঘর থেকে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে আয়নাঘরের ভয়াবহতা।

১৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে। সে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়। গুম করে বন্দিদের যেখানে রাখা হতো তা জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল বা আয়নাঘর নামে পরিচিত। কমিশনের সদস্যদের আহ্বানেই সেসব স্থাপনা পরিদর্শনে গেছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।

অভিযোগ রয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। অন্য আরেকটি তথ্যে বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৪ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ৪০ জনকে। আর ৬৬ জনকে সরকারি হেফাজতে গ্রেপ্তার অবস্থায় পাওয়া গেছে।

যেসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে এসেছেন, তারা গুমের ব্যাপারে মৌনতা অবলম্বন করেছেন। ধারণা করা হয়, এসব মানুষদের গুম করে রাখা হয় আয়নাঘরে। অভিযোগ রয়েছে, আয়নাঘরেই বন্দি ছিলেন- অধ্যাপক মোবাশার হাসান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায়, মাইকেল চাকমা ও মীর আহমদ বিন কাসেমসহ অনেকে

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আয়নাঘর সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে : প্রধান উপদেষ্টা

চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবেন শহীদ পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যরা

মব করলে ডেভিল হিসেবে চিহ্নিত হবেন: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর নির্বাচন প্রস্তুতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক সন্ধ্যায়

সহজ নিয়মের ফায়দা লুটছে স্বাস্থ্য মাফিয়া

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নিয়ন্ত্রণ ভারত ও শেখ পরিবারের হাতে

গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের মালিকানা টিউলিপের

১১ ব্যাংকের কাছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা পাবে বাংলাদেশ ব্যাংক

৮৩ গডফাদারের নিয়ন্ত্রণে দেশের মাদক ব্যবসা, সহযোগী ১১৮৫

১০

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩৫ কর্মকর্তার লকার খুলছে আজ

১১

ডিআইজি মোল্লা নজরুলসহ পুলিশের ৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আটক

১২

ওষুধের দাম নির্ধারণ কোম্পানির হাতে, ঠুঁটো জগন্নাথ অধিদপ্তর

১৩

সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু

১৪

গাজীপুরে হামলার ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন পুলিশ কমিশনার, ওসি প্রত্যাহার

১৫

ভারতের স্বার্থে সীমান্ত হাট

১৬

প্রত্যাশা-প্রাপ্তির ব্যবধান, আশা-নিরাশায় জনগণ

১৭

গাজীপুরে ছাত্র হামলায় জড়িতরা দ্রুত গ্রেপ্তার হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৮

গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষ দিন: সারজিস আলম

১৯

আদালত অঙ্গনে রাজনীতি করা যাবে না

২০