বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শের এ বাংলার রাজনৈতিক সহযোগিতায় এবং স্থানীয় উদ্যোক্তা জনাব আলহাজ্ব মোজাফফর হোসেন হাওলাদার সাহেবের বিদ্যানুরাগ থেকে। উদ্যোগ সফলে ততকালের জেলা শিক্ষা অফিসার ইসাহাক সাহেব আন্তরিক ভুমিকা রাখেন বৃটিশ আমলের সেই জমিদারি শাসন কালে। একজন সমাজকর্মী ও একজন সরকারি শিক্ষা কর্মকর্তার যৌথ প্রচেস্টায় মীর্জাগঞ্জ থানার অন্য আরও একটা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যার নাম র.ই মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেই ১৯৩৪ সাল থেকে উন্নিত হতে হতে আজ এক পরিপূর্ণ বিদ্যালয় যেখানে ছাত্র-ছাত্রী ৮০০ এর মত এবং সরকারের বিনিয়োগ এখন উল্লেখযোগ্য।
উদ্যোক্তা পরিবার এবং সমাজের অন্যান্য পরিবার যার যা সামর্থ্য ছিল তাই দিয়ে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছে। সবার অগাধ আস্থা ছিল জনাব মোজাফফর হোসেন সাহেবের হ প্রতি। উপকৃত হয়েছে হতদরিদ্র পরিবার যাদের সামর্থ ছিল না দুরদুরান্তে সন্তান পাঠিয়ে পড়াশোনা করায়। বিদ্যালয়টির বয়স ৮৭ বছর, প্রতিষ্ঠাতা বিগত হয়েছেন ৩০ বছর তারপর থেকেই বিদ্যালয়টি নেতৃত্ব সংকটে ভোগে। এই ৩০ বছরের বেশিরভাগ সময় বিদ্যালয়টির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের উত্তোরাধিকারগন।
সামাজিক সংকট ঘনীভূত হয় প্রতিষ্ঠাতার নাতি মিজানুর রহমান সোহেল খানের কারনে। তিনি পরিপূর্ণ ভাবে নেশাগ্রস্ত মানুষ। সকল ধরনের নেশার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়৷ সাম্প্রতিককালে বেশী শোনা যায় গাজা ইয়াবার গ্রাহক, ভোক্তা ও বিক্রেতা হিসবে। একটা নিস্পাপ গ্রামীন যুবক সম্প্রদায় কিভাবে নস্ট হতে থাকে তা প্রত্যক্ষ করেছে ঝাটিবুনিয়া ও তার আশপাশের গ্রাম। সোহেল খান গত ২৫ বছর একটানা ঝাটিবুনিয়াতেই বসবাস করেন, উত্তোরাধিকার হয়েছেন তার মৃত নানার বৈধ ও অবৈধ সম্পদের।সাথে পেয়েছেন তার নানার প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়। যেহেতু সোহেল ক্রীড়ামোদী ও সংগঠক তাই অনেক উঠতি যুবককে সে সাথে পায় আবার তাদেরকেই সে ইয়াবার ভোক্তা বানায়। ভোক্তা হয়ে অনেককে ভোক্তা বানিয়েছে মার্কেট হয়েছে অনেক বড় ব্যবসা বেড়েছে অনেকগুন। ভোক্তা ও ব্যবসায়ী হওয়ায় মাদকমামলায় পড়েছে কয়েকবার, জেলও খেটেছে ছয় মাস।
তার চেস্টাই ছিল বিদ্যালয়টি যেন তার কব্জায় থাকে ও কথায় চলে এবং দৈনন্দিন অর্থ যেন তার পকেটে যায়। সেক্ষেত্রে সহযোগিতা পাচ্ছে তার স্ত্রীর নিকট থেকে, যিনি বিদ্যলয়ের একজন শিক্ষিকা। তার কথার অবাধ্য হলেই শিক্ষকদের কপালে জুটে চড় থাপ্পড়, সাথে থাকে অশ্রাব্য গালি। একজন প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুস সালাম শারীরিক লাঞ্চনা এড়াতে পালিয়ে পালিয়ে স্কুল চালিয়ে তার মেয়াদ শেষ করেছেন।
সোহেলের উল্লেখযোগ্য দুস্কর্ম সমুহ:
১। বিদ্যালয়ের কারনিক জনাব মোতাহার সাহেবকে মেরে আহত করা।
২। বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব ফিরোজ আলমকে মেরে রক্তাক্ত করা
৩। প্রধান শিক্ষক জনাব সালাম সাহেবকে অশ্রাব্য গালাগাল
৩। কামরুল ইসলাম কনক ও তার ভাই বাবুকে রামদা দিয়ে কোপানো ( উল্লেক্ষ্য, এই ঘটনায় মামলা হয়েছিল, আপোষ রফায় সেই মামলা শেষ হয় পারিবারিক সমঝোতায়। তবে, সমাজের সকলের সামনে অংগীকার করেছে যে, আর কোন রকম আইনবিরোধী কাজে সে জড়াবে না)। ৫। চলমান আছে ইয়াবা – গাজা সেবন ও বিতরন সাথে তার একান্ত সহযোগী আছে মিজু খান।
৫ই আগস্ট ২০২৪ এর পর পট পরিবর্তন হলে সরকার আগের ম্যানেজিং কমিটি ভেংগে দেয় সুযোগ আসে নতুন কমিটি গঠনের, যেখানে সুযোগ থাকবে না ফ্যাসিস্ট সমর্থক বা দলীয় কর্মীর। এই প্রেক্ষপটে নতুন কমিটির প্রজ্ঞাপন আসে। শুরু হয় নেশাগ্রস্ত নাতি গ্রুপের ততপরতা। কমিটি পাওয়ার চেস্টায় তার সমর্থক ও সে নিজেই মাঝে মাঝেই প্রধান শিক্ষককে নানা ভাবে ভয় দেখায় ও নির্যাতন করে। কমিটি গঠন নিয়ে নানা ধরনের খবর জাতীয় পত্রিকায় আসে এবং তারই প্রেক্ষিতে এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন :
আওয়ামী লীগের র্নিবাচনী প্রচারণায় রুস্তুম মোল্লা ও সাবেক প্রায়াত চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ এর সাথে।
সোহেল একসময় বিএনপি করত তবে ২০০৮ সালের পরে আওয়ামী লীগের সাথে মিলে এলাকায় তার মাদক ব্যবসা প্রসার করে, তাকে প্রকাশ্য আওয়ামী লীগের র্নিবাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহন করতে দেখা যায়।
বর্তমানে সোহেল খান আবার চেষ্টা করছে বিএনপিতে যোগ দেয়ার, যার লক্ষে বিএনপির নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকরে বেশ কয়েকবার ঢাকায় গিয়েছে লবিং করার জন্য যাতে সে বিএনপির কমিটিতে থাকতে পারে।
ছবিঃ আবু বকরের এর সাথে সোহেল খান
অন্যদিকে সোহেল খান এর মাদক ব্যাবসায়ের পার্টনার ও সহোযোগি আওয়ামী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বকরের ছত্রছায়ায় এলাকায় বেপরোয়া ভাবে মাদক ব্যাবসায় চালায়, যারফলে এলাকার তরুনরা মাদকাসক্ত হয়ে পরে। আওয়ামী লীগের সাথে কাজ করার জন্য বিএনপি নেতা কর্মীরা তাকে এখন আর বিএনপির লোক মনে করেন না। অথচ বিএনপি’র লোক বলে সময়ের সুবিধা নিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাতার দৌহিত্র হওয়ায় ওয়ারিশ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যদিও প্রতিষ্ঠাতা ওয়ারিশ আইন এখন আর বলবত নাই।
এদিকে কমিটি গঠনের অভিভাবক সদস্য মনোয়নের সভা অনুসঠিত হয় ১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫। এইদিনের কর্মসূচী আমরা গোপনে প্রত্যক্ষ করি।
প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ অনুসঠান শুরুর অপেক্ষায়, কাকেও কিছু না বলেই নেশাগ্রস্ত সোহেল দলবল নিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পরে এবং বক্তব্য শুরু করে। এই নিয়মবহির্ভূত কাজে বাধা দিলে তার দলবল সভাস্থলে চড়াও হয়। উপস্থিত গন্যমান্যদের একজন প্রতিবাদ করা সভা শৃংখলায় আসে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়। কিন্ত সক্ষম হয় তার পছন্দের প্রার্থীকে তালিকাভুক্ত করতে অর্থাৎ মনোনয়ন তালিকার ১ নম্বরে আনতে তাতেই ভিত হয়ে উঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। তালিকার ১ নম্বরে আছে আসলাম যিনি একজন অশিক্ষিত কাঠুরে হিসাবে পরিচিত। অভিযোগ আছে রাত হলে অনেকের গাছ কেটে বিক্রি করে দেয়। বিশেষ করে বিদ্যালয়ের অনেক দিনের পুরানো গাছ বিক্রি করে দিয়েছে বলে শোনা যায়। এইরকম একজন সদস্য উচ্চশিক্ষিত শিক্ষকদের বস হিসাবে কি করে কাজ করবে এবং তা শিক্ষকরা মেনে নিবেন কি করে? এবং সামনে আগালে হয়ত নেশাগ্রস্ত সোহেল হয়ত বিদ্যালয়ের সভাপতিই হবেন যা হবে বিদ্যালয়ের জন্য দূর্ভাগ্যের কারন। এই ধারনা থেকে কোন কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ের চাকুরী ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।
বিদ্যালয়টি বাচাতে সরকারি মহল এবং বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের উদ্যোগী হওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন